Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

আবহাওয়া ও জলবায়ু

ঠাকুরগাঁও অঞ্চলের জলবায়ু সর্বাপেক্ষা শুষ্ক এবং চরমভাবাপন্ন। বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় ঠাকুরগাঁওয়ের শীতকাল দীর্ঘস্থায়ী। নভেম্বর মাসের প্রথম দিক থেকে শীত শুরু হয় এবং ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। গ্রীষ্মকাল মার্চ মাসের প্রথম থেকে শুরু হয় এবং জুন মাসের প্রথম পর্যন্ত স্থায়ী হয়। মৌসুমি বায়ু জুন মাসের মধ্যে শুরু হয়ে যায়। এপ্রিল ও মে মাসে ঝড় ও শীলাবৃষ্টি হতে দেখা যায়। বছরের অন্যান্য মাসের তুলনায় জুন মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বৃষ্টিপাত বেশি হয়। বাৎসরিক গড় বৃষ্টিপাত ২২৬৬ মি:মি:। গত ১০ বছরের প্রাপ্ত তথ্যের গড় থেকে দেখা যায় গ্রীষ্মকালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এপ্রিল মাসে ৩৩.০৫ সে: এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা জানুয়ারি মাসে ১০.০৫ সে:।

বড় কোনো নদ-নদী নেই বলে বন্যার কোনো তান্ডব বিপর্যস্ত করেনা এর জনজীবনকে। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের বিধ্বংসী রূপ চোখে পড়ে না। নদীর ভাঙ্গনে গ্রাম ও লোকালয় বিলীন হওয়ার আশঙ্কা নেই এখানে। অর্থাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগমুক্ত এক অনুকূল পরিবেশ রয়েছে এই জনপদটিতে। তাই আবহাওয়ার বৈরিতায় নয়, বরং আনুকূল্যেই এখানে মানুষের জীবন খুঁজে পায় নির্ভরতার অবলম্বন। নিশ্চিন্তে বসবাসের যে নিভৃত ঠিকানাটির জন্য মানুষের রয়েছে আকুলতা তারই সন্ধান মেলে এই ঠাকুরগাঁওয়ে। আর এজন্য বোধহয় এই ঠাকুরগাঁও এক সময় নিশ্চিন্তপুর নামেই পরিচিত ছিল সকলের কাছে।

এখানে বৃষ্টিপাত যা হয় তা মোটামুটি স্বাভাবিক। মাঝে-মধ্যে বৃষ্টিহীনতার কারণে খরার প্রকোপ দেখা দিলেও তা খুব একটা স্থায়ী হয় না। আবার অতিবর্ষণ হলে অতিরিক্ত পানি এর বেলে ও বেলে-দোআঁশ মাটি সহজেই শুষে নিতে সক্ষম হয়। এখানে গ্রীষ্মকালে যে গরম ও তাপ হয় তা সহনীয় মাত্রার। তবে শীত ঠাকুরগাঁওয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি প্রলম্বিত হয়। আর এর মধ্যে বেশ কিছুদিন এই শীতের প্রচন্ডতা জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলে। তীব্র শীতে গরিব জনসাধারণ শীতার্ত হয়ে কষ্ট পান বেশ কিছুদিন। মাঝে-মধ্যে ঘন কুয়াশায় যখন কাছের জিনিসও দৃশ্যমানতার বাইরে চলে যায় তখন অকস্মাৎই সৃষ্টি হয় এক অদ্ভুত পরিবেশ। আর এর মধ্যে পড়ে কেউবা সমস্যা কবলিত হন, আবার কেউবা অনুভব করেন দারুণ মজা। কুয়াশার ঘন আস্তরণ ভেদ করে জীবনের রহস্য উন্মোচনের দার্শনিক ভাবটিও কারো কারো মনকে ছুঁয়ে যায়। শীতের এই প্রচন্ডতা ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের আবহাওয়ায় নেই কোনো চরম ভাব। সবকিছুই যেন সহনীয়, নরম ও রমণীয়।